
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ শুধু প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর নয়, সরাসরি গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। তাই গণতন্ত্রকামী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার প্রতিবাদে আয়োজিত এক যৌথ প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ ও নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)। সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভা শেষে সোনারগাঁও হোটেলের পাশের সড়কে মানববন্ধন করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার পরও বিশ্বাস ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি জানি না, আজ কোন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি। আমার বয়স ৭৮ বছর। সারা জীবন সংগ্রাম করেছি একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখার জন্য। আজ যে বাংলাদেশ দেখছি, এ রকম বাংলাদেশ আমি কোনো দিন কল্পনাও করিনি।”
তিনি আরও বলেন, “আজ ডেইলি স্টার নয়, প্রথম আলো নয়—আজ আঘাত এসেছে আমার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার ও কথা বলার অধিকারের ওপর। আঘাত এসেছে জুলাই যুদ্ধের চেতনার ওপর। কারণ, জুলাই যুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ।”
মির্জা ফখরুল গণতন্ত্রকামী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এখন শুধু সচেতন হওয়ার সময় নয়, রুখে দাঁড়ানোর সময়। কোনো রাজনৈতিক দল নয়, সব গণতন্ত্রপ্রত্যাশী মানুষকে সর্বশক্তি দিয়ে এক হতে হবে। এই অপশক্তিকে রুখে দিতেই হবে।”
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় ভবনটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়েও হামলা চালানো হয়। এ সময় সংহতি জানাতে সেখানে গেলে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তা করা হয়। এসব ঘটনাকে স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর সরাসরি হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।